হেফাজতের ২০৩ মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু

ছবি : সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৫ মে ২০২৫, ০১:৪০ পিএম

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা ২০৩টি মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, আগামী তিন মাসের মধ্যে এসব মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য থানাগুলোতে তদন্ত শুরু হয়েছে, দেওয়া হবে চূড়ান্ত প্রতিবেদন। যেসব মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর নিষ্পত্তি হবে আদালতের মাধ্যমে।


জাতীয় পার্টি ও ১৪ দল নিষিদ্ধের দাবি

২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ঘটনায় রাজধানী ঢাকাসহ সাত জেলায় ৮৩টি মামলা করা হয়। এসব মামলায় ৩ হাজার ৪১৬ জনের নামোল্লেখসহ ৮৪ হাজার ৯৭৬ জনকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে দুটি মামলার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। ১৮টি মামলার অভিযোগপত্র দিলেও এগুলোর বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়নি।


হেফাজতের নেতারা বলছেন, রাজনৈতিকভাবে তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করতেই মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে।

তাঁদের দাবি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) মামলাগুলো প্রত্যাহারের আশ্বাস দিলেও বাস্তবে তা হয়নি। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর আশার আলো দেখছেন তাঁরা।

পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, কিছু পুলিশ কর্মকর্তা সরকারের মন জোগাতে এসব মামলা করেছিলেন। এখন আর হয়রানির জায়গা নেই। মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশনা এসেছে।

সূত্র বলেছে, ২০২১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকালে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সারা দেশে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ১৫৪টি মামলা করা হয়। তবে অধিকাংশ মামলার তদন্ত থেমে ছিল। এখন সেগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেসব মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়নি সেগুলোর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে নিষ্পত্তি করা হবে। অভিযোগপত্র দাখিল হওয়া মামলাগুলো আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হবে।

পুলিশ সদর দপ্তরের জনসংযোগ ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী মহাপরিদর্শক ইনামুল হক সাগর এ বিষয়ে বলেন, রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জন্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। আইন মন্ত্রণালয় কাজ করছে।

আইন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। মামলা প্রত্যাহারের জন্য যে কেউ আবেদন করতে পারবেন। এরপর ওই কমিটি যাচাই-বাছাই করে সুপারিশ করবে, প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গত শনিবার হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশ থেকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য দুইমাস সময় দেওয়া হয়। হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদের আমলে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।