জুলাই ঘোষণাপত্রে শাপলা গণহত্যা উপেক্ষিত : হেফাজত

ছবি : সংগৃহীত
০৭ আগস্ট ২০২৫, ০২:০৩ পিএম
জুলাই ঘোষণাপত্রে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিল শাপলা চত্বরের গণহত্যার বিচারের প্রতিশ্রুতি নেই। এ নিয়ে হতাশা ও বিস্ময় প্রকাশ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। বুধবার গণমাধ্যমে এ-সংক্রান্ত বিবৃতি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজেদুর রহমান। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার এ ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।

এনসিপিকে বিতর্কিত করার অ্যাজেন্ডা কাদের?
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদীর সই করা বিবৃতিতে বলা হয়, মূলত শাপলা চত্বরের গণপ্রতিরোধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আলেম-ওলামা, মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও তৌহিদি জনতা দলে দলে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। অকাতরে রক্ত দিয়েছে, জান দিয়েছে। অথচ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের পঠিত জুলাই ঘোষণাপত্রে শাপলা গণহত্যার বিচারের প্রতিশ্রুতি দূরের কথা, কোনো উল্লেখও নেই! ঘোষণাপত্র পাঠকালে হেফাজত নেতারা উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও এমনটি হয়েছে। ফলে এটি যে সচেতনভাবে করা হয়েছে, এতে সন্দেহ নেই। ওলামায়ে কেরাম ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা এতে বিক্ষুব্ধ হয়েছেন। আমরা হতাশ ও বিস্মিত! সামনে দিন আরও আছে। এই উপেক্ষার বিষয়টি অবশ্যই আমাদের মনে থাকবে।
তারা আরও বলেন, ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বে তৌহিদি জনতা আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও হিন্দুস্তানি আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে গণআন্দোলনের অভূতপূর্ব নজির গড়ে তুলেছিল। ওই বছরের ৫ মে ‘ঢাকা অবরোধ’ কর্মসূচি দিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলে হেফাজতে ইসলাম। সেদিন মতিঝিল শাপলা চত্বরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে রাতের আঁধারে নিরীহ-নিরস্ত্র আলেম-ওলামা ও মাদ্রাসা ছাত্রদের ওপর গণহত্যা চালায় যৌথ বাহিনী। তারা বহু লাশ গুম করেছিল। সেই গণহত্যা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আলোচিত হয়েছিল। এ ছাড়া নরেন্দ্র মোদির আগমনবিরোধী প্রতিরোধেও শহীদ হন প্রায় দুই ডজন আলেম ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থী।
নেতারা বলেন, শাপলার শহীদদের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা আজও সেই রাতের ট্রমা থেকে বের হতে পারেননি। তারা ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে ভয় পাচ্ছেন। ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ এখনও গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার সাজানো প্রশাসন ও গোয়েন্দা ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকার। অত্যাচারীরা এখনও বহাল। সাক্ষীদের দীর্ঘদিনের মানসিক ভীতি ও ট্রমা কাটাতে এবং তাদের আস্থায় আনতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। তা না হলে শাপলা গণহত্যার বিচারকাজ আগানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
তারা আরও বলেন, শেখ হাসিনার ষোল বছরের শাসনজুড়ে ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী গণপ্রতিরোধের প্রেরণা ও পথিকৃৎ হেফাজতে ইসলাম। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ওলামায়ে কেরামের আত্মত্যাগ ও অবদান ভুলিয়ে দেওয়া যাবে না।