ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের নিয়োগ প্রক্রিয়া ছিল অবৈধ

ছবি : সংগৃহীত
০৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:২৭ এএম
কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের প্রধান ইমাম হিসেবে মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদকে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘন হয়েছে বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, এই নিয়োগ প্রক্রিয়া ওয়াকফ দলিলের বিরোধী ছিল এবং এটি আইনবিরুদ্ধ। গত ৪ মার্চ হাইকোর্টের দেওয়া ওই রায়ের অনুলিপি রোববার (৬ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

যৌনকর্মীদের স্বীকৃতি দেওয়া ইসলামবিরোধী
১৯৯৪ সালে ওয়াকফ দলিলে শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম নিয়োগের দায়িত্ব মোতয়াল্লিকে ওয়াকফের দলিল নিজেই প্রধান ইমাম নিয়োগের ক্ষমতা দিয়েছে। তাই ইমাম নিয়োগ করেছিলেন তিনি এবং ওয়াকফ প্রশাসকের মাধ্যমে চূড়ান্ত হিসেবে এটিকে সমর্থন করা হয়েছিল।
১৯৫০ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহের জন্য ভূসম্পত্তি ওয়াকফ করে দেন দেওয়ান মোহাম্মদ দাদ খান। ওয়াকফ দলিলে তিনি বলেন, ‘আমার জীবিতকালের মধ্যে উক্ত ওয়াকফকৃত সম্পত্তির মোতয়াল্লি আমি। আমার অভাব হলে ওই সময়ে আমার পুত্রদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ পুত্র মোতয়াল্লি নিযুক্ত হবে। এবং তার অভাব হলে তখন পুত্রদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ পুত্র মোতোয়ালি নিযুক্ত হবে। এবং এভাবে ক্রমিক জ্যেষ্ঠ পুত্র এবং তার অভাবে জ্যেষ্ঠ পুত্র পুরুষানুক্রমে মোতোয়ালি নিযুক্ত হবে। ওয়াকফ দলিলে বলা ছিল, ঈদগাহে বছরে দুই দিন ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। তাতে মোতয়াল্লি ইমাম নিযুক্ত করবেন।’
দলিল অনুসারে, ইমামের নিয়োগ পদ্ধতিতে কোনো বাহ্যিক হস্তক্ষেপ অনুমোদিত ছিল না। কিন্তু ২০০৯ সালে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদকে ইমাম হিসেবে নিয়োগ দেন, যা ছিল ওয়াকফ দলিলের পরিপন্থী। পরে জেলা প্রশাসক কর্তৃক নিযুক্ত মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদকে ইমাম নিযুক্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লা হাইকোর্টে রিট করেন।
হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, রিটকারীকে (আবুল খায়ের মো. ছাইফুল্লাহ) ওয়াকফ দলিল এবং অফিসিয়াল পদ্ধতি উভয় চেতনা অনুসরণ করে স্থায়ীভাবে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের প্রধান ইমাম হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল। তাই মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদকে প্রধান ইমাম পদে নিয়োগ দেওয়াটা শুধু ওয়াকফ দলিলের চেতনার পরিপন্থী নয়, বরং আইনের পরিধিরও বাইরের ছিল।
হাইকোর্টের বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার ও বিচারপতি এ. কে. এম. রবিউল হাসান রিটের শুনানি শেষে রুল মঞ্জুর করে ২০২৫ সালের ৪ মার্চ ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করেন। আদালত বলেন, ‘মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের নিয়োগ আইন এবং ন্যায্যতার পরিপন্থী ছিল এবং এটি অবৈধ বলে বিবেচিত হবে।’